বই পরিচিতিঃ
ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসের ওপর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন উইলিয়াম ড্যালরিম্পেলের “দ্য এনার্কি: কর্পোরেট ভায়োলেন্স এন্ড পিলেজ অফ অ্যান এমপায়ার।” মীর জাফর ও জগৎ শেঠদের চক্রান্ত এবং বেঙ্গলে ব্রিটিশ “ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির” একচ্ছত্র বাণিজ্যিক অধিকার প্রতিষ্ঠার অভিলাষ পূরণের ষোলকলা পূর্ণ হয় ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে নওয়াব সিরাজ-উদ-দৌলাকে পরাজিত ও পরবর্তীতে হত্যা করার মধ্য দিয়ে। এরপর যারাই বেঙ্গলের মসনদে বসেছেন তাদেরকে কোম্পানি ইশারায় উঠতে বসতে হয়েছে এবং এর ব্যতিক্রম হওয়ার কোনো উপায় ছিল না। বেঙ্গলে সহজ বিজয় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে উৎসাহিত করে ধাপে ধাপে সমগ্র ভারত দখল করতে। মোগল সাম্রাজ্য ধ্বংস ও মোগল কর্তৃত্বের অবসান ঘটলেও যেহেতু তখনো ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মধ্যে মোগলদের বৈধতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন ছিল না, সেজন্য কোম্পানি মোগলদের সর্বব্যাপী গ্রহণযোগ্যতাকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে এবং এই বংশের উত্তরাধিকারীদের নামেমাত্র হলেও “সম্রাট” হিসেবে মর্যাদা বহাল রাখে। “মোগল” শাসনের প্রভাব কতটা ছিল তা শেষবারের মতো প্রমাণিত হয় ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহে, যখন কোম্পানির প্রতি বিরূপ সকল আঞ্চলিক শাসক বয়সের ভারে ন্যুব্জ মোগল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে ভারত থেকে বিতাড়নের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সিপাহি বিদ্রোহ ব্যর্থ হলেও ১৮৫৭ সালে বিদ্রোহের যে আগুন জ্বলে ওঠেছিল, তা কখনো নিভে যায়নি। পরবর্ত ৯০ বছর পর্যন্ত নিরন্তর সংগ্রাম শেষ পর্যন্ত সফল হয় ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের মধ্য দিয়ে।
খ্যাতিমান ইতিহাসবিদ উইলিয়াম ড্যালরিম্পেল ১৫৯৯ সালে লন্ডনে ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির’ প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে ভারতে তাদের গেড়ে বসা এবং ব্যাপক লুণ্ঠন, হত্যা ও একের পর এক রাজ্য দখলের জন্য তাদের ষড়যন্ত্র ও যুদ্ধের বর্ণনা দিয়েছেন তাঁর “দ্য এনার্কি: কর্পোরেট ভায়োলেন্স এন্ড পিলেজ অফ অ্যান এমপায়ার” গ্রন্থে।
sharmin –
অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বই যা থেকে অনেক কিছু শিখতে পারে বর্তমান প্রজন্ম